TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

Malda Shootout : রক্তাক্ত মালদা! টোটোচালককে টার্গেট করে ছুটল বুলেট

মালদায় ফের রাতের অন্ধকারে শুট আউট! কালিয়াচকের মোজমপুরে গুলিবিদ্ধ হলেন এক টোটোচালক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আমির শেখ। কী কারণে চলল গুলি, আতঙ্কে এলাকাবাসী।

Debapriya Nandi Sarkar

Malda Shootout : মালদার কালিয়াচক যেন ক্রমেই পরিণত হচ্ছে উত্তপ্ত অপরাধপ্রবণ অঞ্চলে। রবিবার রাত ফের তার জ্বলন্ত উদাহরণ। রাত প্রায় ১০টা নাগাদ কালিয়াচক থানার মোজমপুর এলাকায় আচমকা গুলির আওয়াজে কেঁপে ওঠে গোটা অঞ্চল। পথচারীদের চোখের সামনেই এক টোটোচালক হঠাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রক্তাক্ত অবস্থায়।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

স্থানীয়রা ছুটে এসে দেখেন, রাস্তায় পড়ে রয়েছেন পীরপাড়ার বাসিন্দা আমির শেখ (বয়স প্রায় ৩২)। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উদ্ধার করে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

কে এই আমির শেখ?

স্থানীয়দের বক্তব্য, আমির শেখ একজন সাধারণ টোটোচালক। প্রতিদিনের মতোই রাতে বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁর কোনও অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িত থাকার প্রমাণ নেই বলেই দাবি এলাকাবাসীর।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

তবে পুলিশ সূত্রে খবর, আমিরের সঙ্গে স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতীর ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। তাঁর মোবাইল কল রেকর্ড, গত কিছু দিনের গতিবিধি এবং পরিচিতদের সঙ্গে সম্পর্ক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গুলির নেপথ্যে কোন গ্যাং লড়াই?

প্রাথমিকভাবে অনুমান, কালিয়াচকের চিহ্নিত দুটি দুষ্কৃতী গোষ্ঠীর মধ্যে চলা পুরনো শত্রুতির জেরেই এই হামলা। এই অঞ্চল বরাবরই গ্যাং লড়াইয়ের জন্য কুখ্যাত। বিশেষ করে চোরাচালান, মাদক ব্যবসা ও টোটো পারমিট নিয়ে বহুবার সংঘর্ষ হয়েছে।

তবে আমির শেখ সরাসরি কোনও গ্যাংয়ের সদস্য ছিলেন কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, তিনি হয়তো ভুলবশত টার্গেট হয়ে থাকতে পারেন। অথবা তাঁর গাড়ি বা উপস্থিতি নিয়ে কারও মনে সন্দেহ জন্মেছিল।

ঘটনাস্থলে উদ্ধার খোয়া যাওয়া খালি বুলেট শেল

পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল থেকে একাধিক খালি গুলির খোল সংগ্রহ করেছে। কোন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, তা ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে আসলেই বোঝা যাবে।

এছাড়াও, আশেপাশে লাগানো সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী দল। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব না হলেও, সন্দেহভাজন কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

স্থানীয়দের ক্ষোভ ও আতঙ্ক

এলাকার সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। তাঁদের প্রশ্ন, রাস্তায় বেরোলে কি নিরাপদ থাকা যাবে না? রাত বাড়লেই কেন গুলি চলে? মোজমপুর এলাকার এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, “গত তিন মাসে এটা তৃতীয় বড় গন্ডগোল। আমরা এখন সন্ধ্যার পর আর রাস্তায় বেরোই না। কালিয়াচক ক্রমেই ‘ক্রাইম জোন’ হয়ে উঠছে।”

প্রশাসনের তৎপরতা বাড়ছে

ঘটনার পর থেকেই গোটা এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। রাতভর টহলদারি চলছে। জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এই ধরনের অপরাধে কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে প্রশ্ন উঠছে, এই ব্যবস্থা কি স্থায়ী সমাধান দিতে পারবে? নাকি, কিছুদিন পর ফের গুলির আওয়াজে কেঁপে উঠবে মালদার রাত?

একজন নিরীহ টোটোচালক কেন গুলিবিদ্ধ হলেন, তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠেছে, তেমনি রাতের বেলা খোলাখুলি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর মতো সাহস কীভাবে পাচ্ছে দুষ্কৃতীরা—তা নিয়েও প্রশ্নচিহ্ন। তদন্ত চলছে, কিন্তু আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছেন মোজমপুরবাসী। এখন দেখার, প্রশাসন কত দ্রুত দুষ্কৃতীদের খুঁজে বের করে এবং এলাকাকে শান্ত ও নিরাপদ করে তুলতে পারে।

About Author
Debapriya Nandi Sarkar
Debapriya Nandi Sarkar

আমি দেবপ্রিয়া নন্দী সরকার। ২০১৮ তে পলিটিক্যাল সাইন্স অনার্স নিয়ে বঙ্গবাসী কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি। তারপর ২০১৯ থেকে আমি কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ শুরু করি। পলিটিক্যাল, বিনোদন, লাইফ স্টাইল, আন্তর্জাতিক খবর ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে আমার লেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে।