দুপুর ঠিক ১২টা। কোচবিহার জেলা শাসক অরবিন্দ কুমার মিনা নিজের অফিসের দোতলা থেকে হঠাৎ নেমে গেলেন নিচে। উদ্দেশ্য—নিজের দপ্তরের অধীনস্থ বিভিন্ন সেকশনে সারপ্রাইজ় ভিজিট। জেনারেল সেকশন, গেজেটেড সেল, এস্টাব্লিশমেন্ট সেকশন, মিড-ডে মিল ও হেলথ সেকশনে একাই ঢুকে পড়েন তিনি।
ঘুম, গল্পের বই আর গা-ছাড়া মনোভাব!
তারপর? যা দেখলেন, তাতে রীতিমতো অবাক ও ক্ষুব্ধ জেলাশাসক! কেউ চেয়ারে হেলান দিয়ে ঘুমোচ্ছেন, কেউ পা তুলে আরামে বই পড়ছেন। একজন তো গলা তুলে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছেন! অধিকাংশ কর্মী ছিলেন টেবিলের বাইরে, কেউ কাজের ধারেকাছেও নেই।
ডিএম কে প্রথমে চিনতেই পারেননি অনেকে!
প্রথমে বিষয়টি বুঝতেই পারেননি কর্মীরা। অনেকেই জেলা শাসককে চিনতেন না। যখন বুঝতে পারেন, ততক্ষণে জেলাশাসক ঠিক সামনে দাঁড়িয়ে। কেউ বই ফেলে তড়িঘড়ি ফাইল হাতে নেন, কেউ আবার চেয়ারে বসে পড়েন ব্যস্ত মুখ করে।
১৬ জনকে শোকজ়, একদিনের সময় জবাব দিতে
অফিস চলাকালীন এই গাফিলতির জন্য ১৬ জন কর্মীকে সঙ্গে সঙ্গেই শোকজ় করেন জেলাশাসক। তাঁদের মধ্যে একজন গ্রুপ ডি কর্মী এবং বাকিরা আপার ডিভিশন ক্লার্ক। প্রত্যেককে একদিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনের উদ্যোগ: মাসে দু’বার হবে নজরদারি
জেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি দপ্তরে শৃঙ্খলা ফেরাতে মাসে অন্তত দু’বার করে সারপ্রাইজ় ভিজিট করবেন জেলাশাসক। তাঁর বক্তব্য, “সরকারি পরিষেবা যাতে সাধারণ মানুষ ঠিকভাবে পান, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।”
জনগণের অভিমত: এই হানা দরকার ছিল
জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহুদিন ধরেই সরকারি কর্মীদের গা-ছাড়া মনোভাবের অভিযোগ আসছিল। অনেকেই বলছেন, “সামান্য কাগজপত্র নিয়েও দপ্তরে গেলে ঘন্টার পর ঘন্টা বসিয়ে রাখা হয়। এই ধরনের হানা হলে কর্মীদের ভয় থাকবে, গাফিলতি কমবে।”