TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

সরকার বলছে এক, রিপোর্ট বলছে চার গুণ বেশি! ২০২১-এ কোভিডে মৃত্যু ঘিরে বিস্ফোরক তথ্য

সরকারি হিসেবের চেয়ে চার গুণ বেশি মৃত্যু! গ্রামের মানুষই সবচেয়ে বেশি বিপদে—CRS রিপোর্টে উঠে এল ভয়ঙ্কর সত্যি। কোন জেলায় কত মৃত্যু? পিছনে লুকোনো কি অন্য কোনও গল্প?

Debapriya Nandi Sarkar

২০২১ সাল ছিল ভারতের ইতিহাসে এক কঠিনতম বছর। কোভিডের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে পুরো দেশেই ছড়িয়ে পড়েছিল মৃত্যু আর আতঙ্ক। সেই বছর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে কোভিডে সরকারি হিসেব অনুযায়ী মৃত্যু হয়েছিল ২০,৬১৯ জনের। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের সিভিল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম (CRS) রিপোর্ট বলছে, ওই বছর অতিরিক্ত মৃত্যু ঘটেছে ৮৬,৭৩৬ জনের! অর্থাৎ সরকারি রিপোর্টের তুলনায় প্রায় চার গুণ বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল গ্রামের মানুষ 

সবচেয়ে চমকে দেওয়ার মতো বিষয় হল, এই অতিরিক্ত মৃত্যুর ৮৪ শতাংশই ঘটেছে গ্রামাঞ্চলে। মোট মৃতদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যাও অনেক বেশি—৫১,৯৭০ জন, যেখানে নারীর সংখ্যা ৩৪,৭৬৬ জন। শুধু গ্রামের পুরুষদের মধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ৪৩,৭২৯ জনের। এটা স্পষ্ট করে দেয়, শহরের তুলনায় অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ।

কোন জেলায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু?

সিভিল রেজিস্ট্রেশন রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বড়সড়ভাবে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে গিয়েছল যার হিসেব সরকারি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়নি। নিম্নে জেলা ভিত্তিক মৃত্যুর সংখ্যাটি উল্লেখ করে দেওয়া হল-

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now
  • হুগলি: ১৩,৬৬১ জন
  • দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ১২,৪২৬ জন
  • পশ্চিম বর্ধমান: ১১,২৫০ জন
  • নদিয়া: ৯,৭০৩ জন
  • কলকাতা: ৮,৯৬৮ জন

এই পরিসংখ্যান দেখিয়ে দিচ্ছে, মৃত্যু শুধু গ্রামের মধ্যেই নয়, শহরেও পরিস্থিতি যথেষ্ট ভয়াবহ ছিল।

সরকারি রিপোর্টে কেন উল্লেখ নেই মৃত্যুর আসল সংখ্যা? 

‘সাবর ইনস্টিটিউট’-এর গবেষক আশিন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, এত বিপুল অতিরিক্ত মৃত্যু সরকারি কোভিড সংখ্যার তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে বেশি। এটা স্পষ্টভাবে দেখায় যে, কোভিডে অনেক মৃত্যু ঘটলেও তা সরকারি পরিসংখ্যানে আসেনি। হয়ত অনেক মানুষ চিকিৎসা পাননি, বা তারা হাসপাতালে না গিয়ে বাড়িতেই মারা গিয়েছেন। ফলে তাঁদের মৃত্যু কোভিড বলে ধরা পড়েনি।

সরকারি রিপোর্ট কি সব তথ্য বলছে?

২০২১ সালের ‘মেডিক্যাল সার্টিফিকেশন অফ কজ অফ ডেথ’ রিপোর্ট জানাচ্ছে, দেশে মোট রেজিস্টার্ড মৃত্যুর মধ্যে মাত্র ২৩.৪% ছিল চিকিৎসাগতভাবে নির্ধারিত। এর মধ্যে তিনটি প্রধান কারণ ছিল—

  • সঞ্চালন তন্ত্রের রোগ: ২৯.৮%
  • কোভিড (বিশেষ কোডে): ১৭.৩%
  • শ্বাসতন্ত্রের রোগ: ১২.৭%

পাবলিক হেলথ বিশেষজ্ঞ ড. অনির্বাণ দোলুই জানিয়েছেন, কোভিডে আক্রান্তদের দেহে যে ‘সাইটোকাইন স্টর্ম’ হয়, তা সঞ্চালন ও শ্বাসতন্ত্রে ভয়াবহ ক্ষতি করে। ফলে অনেক সময় মৃত্যুর মূল কারণ হিসাবে কোভিড লেখা না হলেও, মৃত্যু আসলে কোভিড সংক্রান্ত।

কিছু জেলার হঠাৎ করেই কমে গেছিল মৃত্যুর হার! কিভাবে?

এই রিপোর্টে আরও একটি অদ্ভুত তথ্য উঠে এসেছে। উত্তর ২৪ পরগনা এবং হাওড়া জেলার মতো গুরুত্বপূর্ণ জেলায় ২০২১ সালে মৃত্যুর সংখ্যা ২০২০ সালের তুলনায় কমে গিয়েছিল। গবেষকরা বলছেন, এটা একেবারেই অস্বাভাবিক প্রবণতা এবং এর পেছনে কী কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখা জরুরি।