২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনা বেড়ে গেছে। হামলার ঘটনায় ভারতের সেনার বেশ কয়েকজন জওয়ান নিহত হয়েছিলেন, যা গোটা দেশকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। একদিকে দেশের নিরাপত্তা, অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির আশঙ্কা – এই দুই বিষয়ই ভারতের সামরিক পরিকল্পনার মধ্যে বড় ভূমিকা নিচ্ছে। এরই মধ্যে, গত রোববার পাঞ্জাবের ফিরোজপুরে ভারতীয় সেনা একটি ব্ল্যাকআউট মহড়া আয়োজন করে, যা নিয়ে বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
ফিরোজপুরে রাত ৯টায় শুরু হয় ব্ল্যাকআউট মহড়া
রবিবার রাত ৯টা থেকে ৯:৩০ টা পর্যন্ত, ফিরোজপুর শহরের বিভিন্ন অংশে সম্পূর্ণ অন্ধকার বজায় রাখা হয়। ভারতীয় সেনা কর্তৃপক্ষ এই মহড়াটিকে একটি মক ড্রিল হিসেবে চিহ্নিত করেছে, যার মাধ্যমে সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। সেনা কর্মকর্তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের আগেই সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছিলেন, এটি এক ধরনের অনুশীলন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
সেনা ও পুলিশ সতর্ক, প্রত্যেকটি গাড়ির ওপর নজর
মহড়ার সময় ফিরোজপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকার পুলিশ ও সেনা সদস্যরা পুরোপুরি সতর্ক ছিল। সেনা কর্তৃপক্ষ জানায়, যে কোনও গাড়ির হেডলাইট জ্বালানো থাকলে তা বন্ধ করে দেওয়া হতো, এবং পুরো এলাকা নজরদারির মধ্যে ছিল। ফিরোজপুর ক্যান্ট থানা থেকে এসএইচও গুরজন্ত সিং জানান, “আমরা জনগণকে জানিয়েছিলাম, আজ রাত ৯টা থেকে ৯:30 টা পর্যন্ত শহরের আলোগুলি বন্ধ রাখা হবে। পুলিশের টহলবাহিনী সারা শহর জুড়ে মোতায়েন ছিল। যদি কোনও গাড়ি হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করত, তা বন্ধ করা হতো।”
এই মহড়ার তাৎপর্য: যুদ্ধের প্রস্তুতির আশঙ্কা
এটি ছিল একটি নিয়মিত মহড়া, তবে এমন সময়ে এমন একটি মহড়ার আয়োজন যে পাকিস্তানের কাছে একটি বার্তা হতে পারে, তা বলাই বাহুল্য। ভারতের এ ধরনের প্রস্তুতি যুদ্ধের প্রস্তুতির দিকে কি ইঙ্গিত করছে? বিশেষ করে যখন সীমান্তে উত্তেজনা তুঙ্গে, তখন ভারতের এমন পদক্ষেপকে পাকিস্তান এবং আন্তর্জাতিক মহল খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করছে।
পাকিস্তান এবং ভারতের মাঝে নতুন চাপের সৃষ্টি
এমন একটি মহড়া যে শুধু ভারতীয় সেনার জন্য নয়, পাকিস্তান শিবিরের জন্যও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা স্পষ্ট। পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও সামরিক মহলও ভারতের পদক্ষেপ নিয়ে চিন্তিত। বিশেষ করে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা, এমনকি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফও, ভারতের এই পদক্ষেপকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন।
ভারতীয় সেনা প্রস্তুত, কিন্তু সময়ের অপেক্ষা
ভারত সরকারের তরফে জানানো হয়েছে যে, এটি এক ধরনের প্রস্তুতি মহড়া, যাতে দেশের নিরাপত্তা বজায় রাখা যায়। তবে, পহেলগাম হামলার পর পাকিস্তানকে যে কোনও সময় উপযুক্ত জবাব দেওয়া হতে পারে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এখন শুধু অপেক্ষা, ঠিক কবে, কোথায়, কীভাবে ভারত তার জবাব দেয়। আর সেই জবাব ভারতের সেনাবাহিনীর হাতে, যারা সীমান্তে একেবারে প্রস্তুত।
#WATCH | Ferozepur, Punjab: As per the guidelines of the President, Cantonment Board/Station Commander, Ferozepur, rehearsal for blackout was conducted in the entire Cantonment area today, from 9:00 PM to 9:30 PM. pic.twitter.com/6rtxErFKMQ
— ANI (@ANI) May 4, 2025