হুগলির চুঁচুড়ায় শুক্রবার আচমকাই উত্তেজনার আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সিঁদুর’ সংক্রান্ত মন্তব্যের প্রতিবাদে রাস্তায় নামে বিজেপি। কিন্তু ঘটনাটি বহুদূর গড়ায় তখনই, যখন বিক্ষোভ সামাল দিতে আসা মহিলা পুলিশকর্মীদের কপালেই সিঁদুর পরিয়ে দেয় বিজেপির মহিলা কর্মীরা!
মমতার মন্তব্যেই শুরু বিতর্ক
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আলিপুরদুয়ারের সভার পরই এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “উনি (মোদি) এখন সিঁদুর বেচতে বেরিয়েছেন।” এই বক্তব্যে ঝড় ওঠে রাজ্য রাজনীতিতে। এর জবাবে শুক্রবার চুঁচুড়ার পিপুলপাতি পাঁচমাথা মোড়ে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।
সিঁদুর বিক্ষোভে পুলিশের মুখোমুখি বিজেপি মহিলা কর্মীরা
রাস্তায় বিক্ষোভ সামাল দিতে নামে পুলিশ। শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি, উত্তেজনা। ঠিক সেই সময়েই ঘটে নজিরবিহীন ঘটনা—বিজেপির মহিলা কর্মীরা উপস্থিত মহিলা পুলিশদের কপালে সিঁদুর পরিয়ে দেন! এক পুলিশকর্মী রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, “আমরা এখানে কর্তব্যে এসেছি। জোর করে আমাদের সিঁদুর পরানো হল!”
বিজেপির দাবি: সিঁদুর সম্মানের প্রতীক
তবে বিজেপির তরফে ভিন্ন দাবি উঠে আসে। তাঁদের বক্তব্য, কেউ জোর করেনি, বরং মহিলা পুলিশরাই স্বেচ্ছায় সিঁদুর পরেছেন। এক বিজেপি নেত্রী নিরুপা চক্রবর্তী বলেন, “সিঁদুর আমাদের অহঙ্কার। আমি নিজে পরব, অন্য বিবাহিত মহিলাদেরও পরাব। ওঁরা নিজেরাই পরেছেন।”
সামাজিক পর্যালোচনা ও রাজনৈতিক বার্তা
এই ঘটনা ঘিরে সমাজের নানা মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই বলছেন, কর্তব্যরত পুলিশকর্মীর সঙ্গে এ ধরনের আচরণ ঘোরতর অনভিপ্রেত। অন্যদিকে, বিজেপির একাংশের দাবি, এটি ছিল ধর্মীয় সংস্কৃতি ও রাজনীতির প্রতিরোধের প্রতীক।
উল্লেখ্য, সিঁদুর রাজনীতির আগুন এবার ছড়িয়ে পড়েছে রাস্তায়ও। রাজনৈতিক মন্তব্য যে কীভাবে সামাজিক প্রেক্ষাপটে রূপান্তরিত হতে পারে, তার এক চাঞ্চল্যকর উদাহরণ হয়ে থাকল চুঁচুড়ার এই ঘটনা।