সোমবার ভোর ৪ টে নাগাদ পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর ২ নম্বর ব্লকের কৃষ্ণনগর পার্কিং এলাকায় ঘটে গেল এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। খড়্গপুর-কলকাতা ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বিশাল কনটেনারে হঠাৎ করেই লেগে যায় আগুন। কনটেনারের ভিতরে বোঝাই ছিল ৮টি নতুন প্রাইভেট গাড়ি। কিছুক্ষণের মধ্যেই দাউ দাউ করে জ্বলতে শুরু করে গোটা কনটেনার।
দুই ঘণ্টার লড়াইয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে
ঘটনার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে ছুটে আসে দমকলের ইঞ্জিন। একের পর এক ফায়ার টেন্ডার কাজ শুরু করে আগুন নেভানোর। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চালিয়ে শেষমেশ সকাল ৬টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। তবে ততক্ষণে সব শেষ—পুড়ে ছাই হয়ে গেছে কনটেনারের ভিতরের সবক’টি গাড়ি।
প্রথমে ধোঁয়া, তারপর বিস্ফোরণ
প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, প্রথমে দেখা যায় কনটেনারের ভিতর থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ধোঁয়া রূপ নেয় আগুনে। আচমকাই কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়, সম্ভবত গাড়ির ইন্ধন ট্যাঙ্ক থেকে। আগুন এতটাই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে যে কনটেনারের আশেপাশে থাকা অন্যান্য গাড়ি বা মানুষজন সময় থাকতেই সরে যেতে বাধ্য হন।
পুলিশ ও এনএইচ টিম ঘটনাস্থলে
ঘটনার খবর পেয়েই পৌঁছে যায় স্থানীয় থানার পুলিশ, দমকল বিভাগ এবং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের (NH) টিম। গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে নিরাপত্তা বলয়। গাড়ির মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত এই আগুন লাগার কারণ জানা না গেলেও প্রাথমিকভাবে শর্ট সার্কিট বা কোনও যান্ত্রিক ত্রুটিকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে
এই ঘটনার পর স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে—রাতভর জাতীয় সড়কের পাশে পার্কিং করা এই ধরনের দামি গাড়ি বোঝাই কনটেনারগুলির নিরাপত্তা কতটা সুনিশ্চিত? কোনও সুরক্ষা রক্ষী ছিল না কি? আগুন লাগার পর কেউ প্রথমে জল বা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছিল কি না, সে বিষয়েও উঠছে নানা প্রশ্ন।
যান্ত্রিক ত্রুটি হোক বা গাফিলতি—এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন একাধিক গাড়ির মালিক। পাশাপাশি জাতীয় সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা এমন কনটেনারে এই ধরনের অগ্নিকাণ্ড ভবিষ্যতে আরও বড় বিপদের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তদন্তে যদি বড় কোনও গাফিলতির প্রমাণ মেলে, তাহলে কড়া পদক্ষেপ নিতে পারে প্রশাসন।