চিপসের একটা প্যাকেট। সেই নিয়েই প্রাণ গেল এক সপ্তম শ্রেণির ছাত্রের। ‘চোর’ অপবাদে অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হল পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার এক কিশোর। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। উঠেছে মানবিকতার প্রশ্ন। প্রতিবাদে পাঁশকুড়া থানার সামনে হাতে চিপস নিয়ে বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলও।
কি ঘটেছিল সেইদিন?
পরিবারের দাবি, এলাকারই এক সিভিক ভলান্টিয়ার শুভঙ্কর দীক্ষিতের দোকানে গিয়েছিল ছাত্রটি। দোকানে কেউ না থাকায়, বাইরে পড়ে থাকা চিপসের একটি প্যাকেট কুড়িয়ে নেয় সে। এরপরই দোকানদার তাকে চোর বলে তাড়া করেন এবং ধরে ফেলে কান ধরে ওঠবোস করান।
এই অপমান সহ্য করতে না পেরে, ঘরে ফিরে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়—এমনই অভিযোগ মৃত ছাত্রের পরিবারের। মায়ের কণ্ঠে ক্ষোভ ও কান্না মিশ্রিত অভিযোগ, “আমার ছেলে তো আর ফিরে আসবে না, কিন্তু ওর অপমানের বিচার চাই।”
বিক্ষোভে উত্তাল পাঁশকুড়া
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিজেপি। আজ সকাল থেকেই পাঁশকুড়া থানার সামনে হাতে চিপসের প্যাকেট নিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, “একটা চিপসের প্যাকেট কি কারও প্রাণ নিতে পারে? এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
অন্যদিকে, কংগ্রেসও ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছাত্রের পরিবারকে আইনি সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, “এই নৃশংস ঘটনা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আইনত বিচার হওয়া দরকার।”
তদন্তের দাবি, সিভিক ভলান্টিয়ারকে ঘিরে বিতর্ক
ঘটনার কেন্দ্রে থাকা শুভঙ্কর দীক্ষিত পাঁশকুড়ার এক সিভিক ভলান্টিয়ার। একজন সরকারি নিরাপত্তা সহায়কের এমন আচরণ ঘিরে প্রশাসনকেও কটাক্ষ করছে রাজনৈতিক মহল। প্রশ্ন উঠছে—এমন দায়িত্বে থাকা ব্যক্তির যদি সংবেদনশীলতার অভাব থাকে, তবে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ। পরিবার চাইছে ন্যায়বিচার, আর গোটা এলাকা চায়—এমন মর্মান্তিক পরিণতি আর যেন কাউকে না দেখতে হয়।