Voter Card : আর মাসখানেকের অপেক্ষা নয়। মাত্র ১৫ দিনেই মিলবে ভোটার কার্ড। নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তে যেমন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন সাধারণ মানুষ, তেমনই বিরাট প্রশাসনিক পালাবদলেরও ইঙ্গিত দিচ্ছে এটি।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন এবং পশ্চিমবঙ্গে ২০২৬ সালের ভোটের প্রস্তুতি নিয়েই এই পদক্ষেপ বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। বহুদিন ধরেই অভিযোগ ছিল, ভোটার কার্ড হাতে পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে। নতুন ভোটার হোন বা কার্ড সংশোধনের আবেদনকারী—প্রত্যেককেই দীর্ঘ প্রতীক্ষা করতে হত। এবার সেই সমস্যার অবসান ঘটাতে চায় নির্বাচন কমিশন।
কী বলছে কমিশন?
বুধবার এক সাংবাদিক বৈঠকে নির্বাচন কমিশন জানায়, এখন থেকে ভোটার কার্ড তৈরি হতে সময় লাগবে মাত্র ১৫ দিন। নতুন ভোটারদের পাশাপাশি যারা ঠিকানা, নাম বা অন্য কোনও তথ্য সংশোধন করেছেন, তাঁরাও এই সুবিধা পাবেন। এই প্রক্রিয়ায় ট্র্যাকিং সিস্টেমও থাকছে। পোস্ট অফিস মারফত কার্ড পাঠানো হবে, আর তা রিয়েল টাইমে ট্র্যাক করতে পারবেন আবেদনকারীরা। কাগজের কাজ বা মাঝখানে কোনও দালাল নয়—পুরো বিষয়টাই স্বচ্ছ ও ডিজিটাল।
কীভাবে করবেন আবেদন?
এবার অনলাইনেই তৈরি করা যাবে ভোটার কার্ড। এর জন্য প্রয়োজন হবে নির্বাচন কমিশনের Voter Helpline App। অ্যাপটি ডাউনলোড করে, সেখানে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ফর্ম পূরণ করতে হবে। নতুন ভোটার রেজিস্ট্রেশন বা পুরনো কার্ড সংশোধন—উভয় ক্ষেত্রেই এই অ্যাপেই করা যাবে আবেদন।
বর্তমান প্রক্রিয়ায় সমস্যা কী ছিল?
বর্তমানে কেউ যদি নতুন ভোটার হন, বা পুরনো কার্ডে সংশোধন করতে চান, তাহলে ৩০ দিন থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগত। অনেক সময় আবেদন হারিয়ে যেত, বা পোস্ট অফিসে আটকে থাকত। এই নতুন ব্যবস্থা সেই সমস্যার স্থায়ী সমাধান দিতে পারে বলে মনে করছে কমিশন।
কতটা বাস্তবসম্মত এই ঘোষণা?
বিরোধীদের একাংশের মতে, নির্বাচন আসন্ন বলেই এত দ্রুত গতিতে ঘোষণা। তবে কমিশনের যুক্তি, “প্রযুক্তির উন্নয়ন হয়েছে। এখন ভোটাররা দ্রুত পরিষেবা পাওয়ার দাবিদার। আমরা সেই দায়বদ্ধতা থেকেই এই পরিবর্তন এনেছি।”
মানুষের প্রতিক্রিয়া কেমন?
কলকাতার বাসিন্দা, কলেজ পড়ুয়া রাহুল দে বললেন, “আমি গতবছর আবেদন করেছিলাম। কার্ড আসতে দেড় মাস সময় লেগেছিল। এবার যদি ১৫ দিনে হাতে পাই, তো খুবই ভালো।” একই সুর রাণাঘাটের গৃহবধূ রিমা ঘোষের গলায়, “ভোটার কার্ড ছাড়া অনেক কিছুতেই সমস্যা হয়। দ্রুত হাতে পেলে অনেক কাজ সেরে ফেলা যাবে।”
দেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় এই পরিবর্তন নিঃসন্দেহে যুগান্তকারী। শুধু কার্ড পাওয়া নয়, সময়ের অপচয় রোধ, স্বচ্ছতা এবং নাগরিক পরিষেবা আরও সহজ করতেই এই পদক্ষেপ। ১৫ দিনের মধ্যে ভোটার কার্ড—এই প্রতিশ্রুতি কতটা সফল হয়, সেটাই এখন দেখার।