TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

পুলিশ নয়, তবু পুলিশের পোশাক! সিভিকদের ক্ষমতা কতদূর?

সিভিক ভলান্টিয়রদের ঘিরে অভিযোগের পাহাড়, সীমাহীন ক্ষমতা আর প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগ প্রক্রিয়া—কেন এই ‘সহায়ক বাহিনী’ নিয়ে এত সমালোচনা? জানুন ভিতরের সব গল্প।

Debapriya Nandi Sarkar

সাধারণ মানুষের চোখে পুলিশের পোশাকের ছায়া, বাস্তবে সরকারি স্বীকৃত নয়—এই ‘সিভিক ভলান্টিয়র’ বাহিনীকে ঘিরে রাজ্য জুড়ে তৈরি হয়েছে এক অভূতপূর্ব বিভ্রান্তি ও বিতর্ক। প্রশ্ন একটাই—এদের আসল কাজটা ঠিক কী? আর কেন এদের নাম জড়াচ্ছে তোলাবাজি থেকে শুরু করে পুলিশি বাড়াবাড়ির মতো গুরুতর অভিযোগে?

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

নিয়োগে কী নিয়ম?

রাজ্য সরকার ২০১১ সালের পরে বিভিন্ন সময়ে সিভিক ভলান্টিয়র নিয়োগ করেছে মূলত ট্রাফিক ও প্রশাসনিক কাজে পুলিশের সহায়ক হিসাবে। কিন্তু এই নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়েই উঠেছে বহু প্রশ্ন। কোনও স্বচ্ছ নিয়মনীতি ছাড়াই কীভাবে হাজার হাজার আবেদনকারীর মধ্যে বাছাই হয়? প্রাক্তন পুলিশ কর্তা সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, তখনকার দিনে দেখা হতো শরীরচর্চা, বয়স ২১ থেকে ৪০–এর মধ্যে হলে অগ্রাধিকার। তবে কোনও প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ ছিল না।

কাজের নির্দিষ্ট রূপরেখা কি আছে?

না। আর এখানেই মূল সমস্যা। প্রাক্তন পুলিশ কর্তারা বলছেন, সিভিকদের কাজের কোনও নির্দিষ্ট গাইডলাইন নেই। কেউ বাইকে ‘পুলিশ’ লিখে ঘোরে, কেউ দাদাগিরি করে অর্থ আদায় করে, আবার কেউ তোলাবাজির মতো গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত। কিছু ক্ষেত্রে আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে ব্যাপার। যেমন আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার পর সুপ্রিম কোর্টও সিভিকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

বেতন আর কাজের ভার

শুরুর দিকে এদের বেতন ছিল মাত্র ৪৫০০-৫০০০ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১,০০০ টাকায়। কিন্তু কাজের পরিমাণ যেভাবে বেড়েছে, সে তুলনায় বেতন এখনও অনেক কম বলে মনে করছেন অনেক পুলিশ কর্তা। তাঁরা বলছেন, “সিভিকরা কনস্টেবলদের সমান দায়িত্ব নিচ্ছে, অথচ বেতন তুলনায় অনেক কম।”

প্রশিক্ষণ ছাড়াই পুলিশি দায়িত্ব?

বিভিন্ন ঘটনায় দেখা যাচ্ছে সিভিকরা পুলিশের মতো ব্যবহার করছে—লোককে হেনস্থা করছে, মদ খেয়ে ডিউটি করছে, বাইকে পুলিশ সাইন লাগিয়ে ঘুরছে। অথচ এদের কোনও নিয়মিত প্রশিক্ষণ নেই। নামেই ‘ভলান্টিয়র’, কিন্তু কাজের ভার একেবারে কনস্টেবলের মতো। হুগলির এক সিভিক জানিয়েছেন, তাঁদের ইন-হাউস ট্রেনিং হওয়ার কথা থাকলেও তা এখনও হয়নি।

আইনি জবাবদিহিতা কোথায়?

সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যদি কোনও সিভিক অসামাজিক কার্যকলাপে যুক্ত থাকে, তাহলে তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে তাদের বরখাস্ত করা যেতে পারে।” কিন্তু প্রশ্ন হল, নিয়ম না থাকলে সেই তদন্তের মানদণ্ডই বা কী?

উল্লেখ্য, ‘গ্রিন পুলিশ’ নামে শুরু হলেও এখনকার সিভিক ভলান্টিয়ররা যেন অঘোষিত আধিকারিক রূপে কাজ করছে। পুলিশ ও প্রশাসনের কিছুটা ঘাটতি মেটাতে আনা হলেও, প্রশিক্ষণহীন, কম বেতনভোগী, নির্দিষ্ট দায়িত্ব ছাড়া এই বাহিনী যেন হয়ে উঠেছে ‘অসংগঠিত অথচ ক্ষমতাধর’ এক ছায়া-পুলিশ। ফলে বিতর্ক আর প্রশ্ন এদের ছাড়ে না।

About Author
Debapriya Nandi Sarkar
Debapriya Nandi Sarkar

আমি দেবপ্রিয়া নন্দী সরকার। ২০১৮ তে পলিটিক্যাল সাইন্স অনার্স নিয়ে বঙ্গবাসী কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি। তারপর ২০১৯ থেকে আমি কনটেন্ট রাইটার হিসেবে কাজ শুরু করি। পলিটিক্যাল, বিনোদন, লাইফ স্টাইল, আন্তর্জাতিক খবর ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে আমার লেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে।