TRENDS
হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে গেল ল্যাপটপ? কী করবেন এখনই জেনে নিন
সাধ্যের মধ্যে সাশ্রয়ী বাইক খুজছেন! রইল ১ লাখের কমে সেরা কিছু সন্ধান

ফের ট্রাম্পের ট্যারিফ বোমা! এবার কোপ পড়ল ভারতের ওষুধ শিল্পে, ধস শেয়ার বাজারে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের ঘোষণা করলেন ফার্মা পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক। এতে মার খাচ্ছে ভারতের ফার্মা সেক্টর। শেয়ার বাজারে ধস। জেনে নিন বিস্তারিত।

Debapriya Nandi Sarkar

আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার আবহেই ফের একবার মার্কিন মুলুক থেকে এল ধাক্কা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন—ফার্মা পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক বসাতে চলেছেন তিনি। আর তার ফলেই মঙ্গলবার সকাল থেকেই মুখ থুবড়ে পড়ল ভারতের ওষুধ শিল্প। একদিনে একাধিক ফার্মা সংস্থার শেয়ার দামে দেখা গেল ৩ থেকে ৪ শতাংশ পর্যন্ত পতন।

Advertisements
Whatsapp-color Created with Sketch. গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে এখনই যুক্ত হোন 👉🏻
Join Now

ট্রাম্পের ঘোষণা এবং তার প্রেক্ষাপট

ইজরায়েল-ইরান সংঘর্ষের মধ্যেই মঙ্গলবার ট্রাম্পের এই ঘোষণাটি সামনে আসে। প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট করে বলেছেন, আমেরিকায় ওষুধ উৎপাদন বাড়াতেই এই সিদ্ধান্ত। তাঁর মতে, বিদেশ থেকে ওষুধ আমদানি করার প্রবণতা কমলে, দেশে উৎপাদন বাড়বে এবং তাতে আমেরিকানদের জন্য ওষুধের দামও কমে আসবে। তারই অংশ হিসেবে ভারতের মতো দেশের উপর চাপ বাড়াতে চাইছেন তিনি। উল্লেখ্য, এর আগেই এপ্রিল মাসে ট্রাম্প বিশ্বের ৬০টি দেশের উপর অতিরিক্ত শুল্ক বসানোর কথা বলেছিলেন। তখনও ফার্মা সেক্টরকে আলাদা করে উল্লেখ করেছিলেন তিনি। এবার সেই পরিকল্পনাই বাস্তব রূপ পেতে চলেছে।

ভারতের শেয়ার বাজারে প্রতিক্রিয়া

মঙ্গলবার ভারতের শেয়ার বাজারে একপ্রকার ঝড় বয়ে যায়। ইরান-ইজরায়েল উত্তেজনার পঞ্চম দিনে নিফটি সূচক ২৪,৯০০-এর নিচে নেমে যায়। সেনসেক্স পড়ে ২১২ পয়েন্ট, থামে ৮১,৫৮৩-তে। নিফটি ৫০ বন্ধ হয় ২৪,৮৫৩-তে। ফার্মা সেক্টরের শেয়ারগুলোর মধ্যে পতন আরও তীব্র ছিল। নিফটি ফার্মা সূচক একাই ২.২ শতাংশ দুর্বল হয়। ২০টির মধ্যে ১৯টি শেয়ার লাল রঙে লেনদেন করে।

Whatsapp-color Created with Sketch. সেরা খবরগুলো মোবাইলে পেতে এখনই যুক্ত হোন👉🏻
Join Now

কোন কোন কোম্পানির শেয়ারে ধস?

সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছে অরবিন্দ ফার্মা, যার শেয়ার ৪ শতাংশ পড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ১,০৯৪.৪ টাকায়। লুপিন, গ্রানুলস, ন্যাটকো ফার্মা-র মত সংস্থাগুলির শেয়ার ৩ থেকে ৪ শতাংশ কমে যায়। লারাস ল্যাবস, ডক্টর রেড্ডি’স, সান ফার্মা, গ্লেনমার্ক-এর মত প্রতিষ্ঠানগুলিও ২-৩ শতাংশ শেয়ার মূল্যের পতন দেখতে পায়। এই অবস্থার জেরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

ভারতের ক্ষতির অঙ্ক কতটা?

২০২৪ সালে ভারত আমেরিকায় প্রায় ১২.৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ওষুধ রফতানি করেছিল। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ কার্যকর হলে সেই রফতানির উপর বড় ধাক্কা আসবে। ভারতের ফার্মা ইন্ডাস্ট্রি আন্তর্জাতিক বাজারের উপর অত্যন্ত নির্ভরশীল। শুধু কর্মসংস্থান নয়, জিডিপিরও একটা বড় অংশ এই খাত থেকে আসে। অতিরিক্ত শুল্ক বসলে অনেক সংস্থার লাভের হার কমে যাবে, যা কর্মসংস্থান ও নতুন বিনিয়োগেও প্রভাব ফেলবে।

এখন কী করবে ভারত?

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের উচিত WTO-র মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপত্তি জানানো। পাশাপাশি, দু’দেশের কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার দরজা খোলা রাখতে হবে। ভারত সরকারের তরফে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না এলেও আশা করা হচ্ছে শীঘ্রই এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ট্রাম্পের এই শুল্ক ঘোষণার প্রভাব শুধু শেয়ার বাজারেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে ভারতের ওষুধ শিল্পে, রফতানি আয় এবং কর্মসংস্থানে। আন্তর্জাতিক রাজনীতির দাবা খেলায় আবারও যে ভারতের ফার্মা সেক্টর ঘায়েল হতে চলেছে, তার প্রমাণ মিলছে মঙ্গলবারের বাজারেই।